
অলসতা কী ব্যর্থ হবার প্রধান কারণ ?
প্রতিদিন যদি আমরা আমাদের অলসতার হিসেব করি তাহলে দেখা যাবে কিছু না কিছু কাজ আগামী কালের জন্য ফেলে রাখছি। যা হয়ত একটু চেষ্টা করলে আজই সম্পাদন করতে পারতাম। এভাবে কাজ জমা করতে করতে করতে প্রতিদিনই পিছিয়ে পড়ছি যা জীবনে বড় হওয়ার জন্য কত বড় ক্ষতি করছে আমরা বুঝতেই পারছি না।
ছাত্র অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ সময়টাকে আমরা সবচেয়ে বেশী হেলায় নষ্ট করছি বা করেছি। আজ পড়ব না কাল একসাথে পড়ব। আজ থাক কাল। এভাবে করতে করতে যখন পরীক্ষা সামনে চলে আসে তখন চোখে মুখে অন্ধকার দেখা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। ফলাফল রেজাল্ট খারাপ। যা প্রত্যাশা ছিল তা থেকে দূরে সরে গিয়ে ভিন্ন লক্ষ ঠিক করতে হয়। অথবা যে উজ্বল ভবিষ্যৎ আপনার জন্য অপেক্ষা করছিল তার সাথে আপোষ করতে হয়।
তবে কেন এভাবে নিজের উজ্বল ভবিষ্যৎকে বিসর্জন দেওয়া। প্রতিদিন খুব বেলা করে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরী করেছেন। সকালে নানা অজুহাতে ঘুমাতে ভাল লাগে। কখনও ভাবেননি সকালের সূর্যটা ঠিকই তার সময় ঠিক রেখে পূব আকাশে উঠে গেছে। আপনি আপনার কাজটি ঠিকমত না করলেও প্রকৃতি তার কাজটি ঠিক তার আপন নিয়মে করে চলছে। যেখান থেকে আপনি শিক্ষা নেওয়ার বদলে হয়ত বলছেন সূর্যটা দেরী করে উঠলে আপনি আরও একটু ঘুমাতে পারতেন।
দুনিয়ার সব নিয়ম আপনি যে বদলে দিতে চলেছেন তা কি ভেবেছেন একবারও। প্রতিদিন গভীর রাতে ঘুমান আর যখন আপনার ঘুম ভাঙে যখন দুপুর প্রায়। আপনার সকাল যখন হয় তখন মধ্য আকাশে সূর্য। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে আপনার সরব উপস্থিতি। রাতভর গল্প আর আড্ডাবাজি। বুঝবেন ঠিক তখন যখন আপনার জায়গা দখল করে বসে থাকবে অন্যরা। তাদের সফলতা দেখবেন আর দোষ দিবেন উপরওয়ালার ঘাড়ে।
খুব সকালে একটা দিন ঘুম থেকে উঠে পড়ুন না। সকাল থেকে আপনার প্রয়োজনীয় কাজ গুলো সেরে ফেলুন। প্লান মাফিক যে যে কাজ গুলো করতে চান সেগুলো করতে থাকুন। দিন শেষে এস হিসাব মেলান দেখবেন এই দিনটা আপনার জন্য সত্যিই অনেক বড় হয়ে গিয়েছিল সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার কারনে। আর আপনার কাজের প্রাপ্তির জায়গাটাও অনেক সমৃদ্ধ হয়েছে।
প্রতিষ্ঠিত হতে চাইলে সময়ের অপচয় করা চলবে না কিছুতেই। গল্প আর আড্ডাবাজি করার মত সময় লাইফে অনেক সময় পাবেন যদি সফল হতে পারেন। প্রতিটা সফল মানুষ আপনি যা করেন তারাও একই কাজ করেন। তবে সময়ের কাজ সময়ে করেন। আপনার জীবনের ব্যর্থতার জন্য আপনি ছাড়া অন্য কেউ দায়ী হতে পারে না। সব কিছুই আপনার কর্মফল। ভাল কিছু কাজ করলে তার ফল তো ভালই হবে। সারা বছর পড়াশুনা করা ছাত্রের রেজাল্ট নিশ্চয় যে সারা বছর ঘুরে বেড়িয়ে পরীক্ষার হলে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে তার মত হবে না।
গুরুজনদের যে কথা গুলো এখন আপনার কাছে বিষ মনে হয় একটা সময় এসে অনুধাবন করবেন এই কথা গুলোই আপনার জন্য সবচেয়ে মূল্যবান কথা ছিল। বন্ধু জীবনে অনেক আসে তবে তা সবার জন্য ভাল কিছূ বয়ে আনে তা নয়। সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস আর অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ কথাটি বইয়ের পাতার মধ্যে সীমবদ্ধ না রেখে নিজের জীবনে একটু কাজে লাগান। সেই সাথে সময় কে স্রোতে ভাসিয়ে না দিয়ে সময়ের সাথে পাল ওড়ান। তাহলেই দেখবেন জীবনটা বদলে যাবে সফলতার সাথে।