বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে পাল্লা দিয়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটায় এরকম প্রধান পাঁচটি কারণের মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম। পৃথিবীতে প্রতি ১০ সেকেন্ডে একজন ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষ মারা যায় এবং প্রতি ১০ সেকেন্ডে দুইজন ডায়াবেটিস রোগী সনাক্ত করা হয়। তাই ডায়াবেটিকসের ভয়াবহতা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত জরুরি। ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ পুরোপুরি বা সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায় না। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে এটি নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ জীবনযাপন করা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার অনেক উপায় আছে।
ডায়াবেটিসের বড় সমস্যা হলো এটি সঙ্গে করে আরও অনেকগুলো রোগ বয়ে আনে। তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের সবকিছু রুটিনমাফিক হওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মেপে খাবার খাওয়া, ওষুধ সেবন, শরীরচর্চা এগুলো করতে হবে।
কেউ যদি মনে করেন নিয়মমাফিক খাবার ও ওষুধ খেলে ডায়াবেটিস থেকে সুস্থ থাকবেন তবে তা পুরোপুরি ঠিক নয়। আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হন তবে ওষুধের সঙ্গে নিয়মিত শরীরচর্চা না করলে অসুস্থ হয়ে পড়বেন।
ডায়াবেটিস রোগীরা কীভাবে শরীরচর্চা করে সুস্থ থাকবেন তা জেনে নিন-
ডায়াবেটিস থাকলে প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা শরীরচর্চার প্রয়োজন। কোন ফর্মে করবেন, তা নির্ভর করবে আপনার উপর। তবে যদি শরীরচর্চার অভ্যাস না থাকে, তাহলে যেটা সবচেয়ে ভালো লাগে সেই কাজটা দিয়ে শরীরচর্চা শুরু করুন।
যারা নাচতে ভালোবাসেন তারা দিনে আধা ঘণ্টা নাচ প্র্যাকটিস করুন। ফর্মাল কোনো নাচ নয়। এমনকি আপনি কখনো নাচ না শিখলেও কোনো সমস্যা নেই। পছন্দের গান চালিয়ে তার তালে হাত, পা নাড়ান। বডি মুভমেন্ট করুন। এতেও আপনার ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পাশাপাশি ভালো থাকবে মন। প্রতি সপ্তাহে পাঁচদিন এই অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে অন্য ফর্মে শরীরচর্চাও হবে, আবার শখ পূরণও সম্ভব। মনও ভালো থাকবে।
আপনার বাগান করার শখ থাকলে মন দিয়ে বাগান তৈরি করুন। গাছ লাগান। মাটি কুপিয়ে সার দিন। ডায়েবেটিস থাকলে বাগান করার মাধ্যমে দারুণ শরীরচর্চা করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাগান করলে একই সঙ্গে অ্যারোবিক অ্যাকটিভিটি এবং স্ট্রেন্থ ট্রেনিং সম্ভব।
হাঁটার বিকল্প নেই। হাঁটার মতো শরীরচর্চা অন্য কোনো ফর্মে এত সহজে হয় না বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ডায়াবেটিস থাকলে হাঁটাটা রুটিনে পরিণত করুন। আপনার ব্যস্ত সময়ের মধ্যে সকালে আলাদা করে যদি সময় না ও পান, কোনও ক্ষতি নেই। লাঞ্চের পরে বা বিকেলে, যখনই সময় পাবেন হাঁটা অভ্যেস করুন।
ব্লাড সুগার লেভেল কন্ট্রোল করার জন্য স্ট্রেন্থ ট্রেনিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ওয়েট লিফ্টিং করতে পারেন। ডাম্বেল বা যেকোনো ভারী জিনিস নিয়ে বাড়িতেই এই অভ্যাস তৈরি করতে পারেন। এর জন্য আলাদা করে জিমে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
এছাড়া করতে পারেন যোগা অভ্যাস। ব্লাড সুগার কন্ট্রোল, ওবেসিটি কন্ট্রোল, কোলেস্টরল ব্যালেন্সের মতো জরুরি প্রয়োজন মিটতে পারে যোগাতে। একই সঙ্গে হাড় শক্ত হবে, হাড়ের নমনীয়তা বাড়বে এবং ঘুম ভালো হবে।