https://lifestylecampus24.com/

একজিমা কী ? কেন হয় ? প্রতিকার কী ?

একজিমা কী ?

একজিমা একটি প্রাচীন চর্মরোগ এবং ‘একজিমা শব্দটি আধুনিক শব্দ। এটি এক ধরনের প্রদাহ জনিত চর্মরোগ। শরীরে চামড়ার ওপর থেকে পানি রস নিঃসৃত হয়ে যাওয়াকে একজিমা বলে।

একজিমা (Eczema) এক প্রকাম চর্ম রোগ যা বাংলাদেশে পামা, বিখাউজ, কাউর ঘা ইত্যাদি স্থানীয় নামে পরিচিত। চিকিৎসা শাস্ত্রে এটিকে সচরাচর এটপিক ডার্মাটাইটিস (atopic dermatitis) হিসাবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে, কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে একজিমার অন্যতম উৎস বংশগত বলে ধারণা করা হয়।

এই রোগে ত্বকের বিশেষ কোন কোন স্থানে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত স্থান লালাভ দেখায়, এখানে পুঁজবটী জন্মে, চুলকায়, রস ক্ষরণ হতে পারে এবং মামড়ি পড়ে। এটি কোন সংক্রামক রোগ নয়। তবে এ রোগ থেকে হাঁপানি এবং হে ফিভার হয়ে থাকে।

এটি সহজ কোনো রোগ নয়। এর বিস্তৃতি আরো অনেক বেশি। অনেক সময় চামড়ার উপর থেকে রস বা পানি জাতীয় কিছু নিঃসৃত হতে দেখা যায় না অর্থাৎ উপসর্গ অন্যরকম দেখা যায়। যেমন চুলকানি হতে পারে, ফুসকুড়ি বা আলসারের মতো দেখা দিতে পারে। চামড়া শুষ্ক হতে পারে, অথবা কোনো কিছুই দৃশ্যমান নয় শুধু চামড়ার উপরে চুলকানি হতে পারে বিশাল একটা জায়গা জুড়ে লালচে বর্ণ ধারণ করে  কিন্তু সেটিও একজিমা।

অনেকের ভালো হয়ে যায় আবার আক্রান্ত স্থানে পানি লেগে আবার হতে পারে এভাবে চলতে থাকে। একজিমাকে বড় আকারে ভাগ করলে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।

১। “ইনটেনসিভ ” ২। “এক্সটেন্সিভ” একজিমা। একটা শরীরের ভিতর থেকে কাজ করে আরেকটা শরীরে বাইরে থেকে হতে পারে।

এই দুই প্রকার একজিমা আবার অনেক রকম হয়ে থাকে। যেমন বাচ্চাদের হয়, যেটি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক মানুষের বয়সের সাথে সাথে চলে গেলেও অনেকের এটি থেকে যায়। আর সেটি হলো এটোপিক একজিমা।

শিশুদের ক্ষেত্রে পুরো শরীরেই চুলকানি থাকে৷ বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাঁটুর পিছনের অংশ, কনুইয়ের সামনের অংশগুলি বেশি আক্রান্ত হয়৷ প্রাপ্তবয়স্কদের হাত ও পা বেশি আক্রান্ত হয়৷ এছাড়া শরীরের অন্যস্থানও আক্রান্ত হতে পারে৷

https://lifestylecampus24.com/

কেন হয় ?

একজিমার প্রকৃত কারণ এখনো অজানা৷ তবে ধারণা করা হয় জেনেটিক বা বংশগত কারণ ও ইমিউন সিস্টেমের ত্রুটিপূর্ণ কাজ অন্যতম৷ যাদের বংশে বা পরিবারে একজিমা, হাঁপানি, হে ফিভার বা খড় জ্বর থাকে তাদের এ সমস্যা বেশি হয়৷ এমন ব্যক্তিদের বলা হয় অ্যাটোপিক পারসন বা ব্যক্তি৷ তাদের বিভিন্ন পরিবেশে, এলার্জেন, ধুলোবালি, শুস্ক আবহাওয়া ও বিশেষ কিছু খাবারের কারণে এই রোগের প্রকটতা বেড়ে যায়৷

অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস রোগে মূলত রোগের লক্ষণ দেখে ডাক্তাররা নির্ণয় করে থাকেন৷ এর জন্য তেমন কোন পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না৷ যেহেতু রোগের প্রকৃত কারণ এখনও অজানা, সেহেতু এর সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই যার দ্বারা রোগটি নিরাময় করা যায়৷ এটিকে নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ বলা হয়৷ চিকিৎসার মাধ্যমে এর প্রকটতা নিয়ন্ত্রনে রাখা হয়৷

অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিসের চিকিৎসা মূলত এন্টিহিস্টামিন ও টপিক্যাল স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়৷ এছাড়া রোগের লক্ষণ, প্রকটতা ও ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের জন্য ডাক্তররা প্রয়োজনে এন্টিবায়োটিক ও মুখে স্টেরয়েড দিয়ে থাকেন৷ এছাড়া ভিটামিন-ডি ও প্রোবাওটিকের ভূমিকা রয়েছে বলে গবেষণায় জানা যায়৷

https://lifestylecampus24.com/

প্রতিকার

অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস বা একজিমা হতে ভালো থাকার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো স্বাস্থ্য সচেতনতা৷ যেমন যেসব পরিবেশে বা খাবারের কারণে চুলকানি হয় তা পরিহার করা৷ ধুলোবালি, রোদ, সিগারেটের ধোঁয়া এড়িয়ে চলা৷ সুঁতি কাপড় পরিধান করা৷ সাবান, স্যাভলন বা ডেটল পরিহার করা বা কম ব্যবহার করা বা কম ক্ষারীয় সাবান ব্যবহার করা বা সাবানের পরিবর্তে শরীরে শ্যাম্পু ব্যবহার করা৷ খুব অল্প সময়ে গোসল করা, ৫ থেকে ১০ মিনিটের বেশি সময় ধরে গোসল না করা৷ গোসলে ঠান্ডা পানির পরিবর্তে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা৷ সবসময় শরীরে লোশন, তেল বা ভ্যাজলিনের মত পেট্রোলিয়াম ব্যবহার করে দেহের আর্দ্রতা বজায় রাখা৷ নারকেল তেল, অ্যালোভেরা জেল অথবা আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহারেও উপকার পাওয়া যায়। এগুলো আক্রান্ত স্থানগুলোয় ব্যবহার করলে সুফল পাবেন।

Comments

comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!